৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, সোমবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৩৬ পূর্বাহ্ণ
শিরোনাম

ওমর খৈয়াম বললেন, নেশার দায়িত্ব আমার !

মুন্না ইসলাম | citybuletin.com
প্রকাশ: ১৫১৫ ঘণ্টা, রোববার ১৯ মে ২০২৪ || সর্বশেষ সম্পাদনা: ০৩৩৯ ঘণ্টা, সোমবার ২০ মে ২০২৪


ওমর খৈয়াম বললেন, নেশার দায়িত্ব আমার ! - জাতীয়

ওমর খৈয়াম (জন্ম মে ১৮ ১০৪৮ - মৃত্যু ডিসেম্বর ৪, ১১৩১) একজন ইরানের কবি, গণিতবেত্তা, দার্শনিক ও জ্যোতির্বিদ। ইরানের নিশাপুরে জন্মগ্রহণ করার পর যুবা বয়সে তিনি সমরখন্দে চলে যান এবং সেখানে শিক্ষা সমাপ্ত করেন। এর পর বুখারায় নিজেকে মধ্যযুগের একজন প্রধান গণিতবিদ ও জ্যোতির্বিদ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেন। তার বীজগণিতের গুরুত্বপূর্ণ "Treatise on Demonstration of Problems of Algebra" গ্রন্থে তিনি ত্রিঘাত সমীকরণ সমাধানের একটি পদ্ধতি বর্ণনা করেন। এই পদ্ধতিতে একটি পরাবৃত্তকে বৃত্তের ছেদক বানিয়ে ত্রিঘাত সমীকরণের সমাধান করা হয়। ইসলামি বর্ষপঞ্জি সংস্কারেও তার অবদান রয়েছে।

ওমর খৈয়ামের রুবাই হচ্ছে বিখ্যাত সৃষ্টি। রুবাই লেখার সময় তিনি তৃষ্ণা মেটাতে মদপান করতেন। এক রাতে ওমর খৈয়াম রুবাই লিখছিলেন সেসময় তাঁর তৃষ্ণা লাগে। আর একজন সুরাসক্তের পিপাসা মানে মদপানের ইচ্ছা ! ওইদিন রাতে পিপাসা পাওয়ার পরেও প্রচন্ড মেধাবী এই মানুষটি পণ করলেন গোটা দু-তিনেক লা-জওয়াব রুবাই না লিখে তিনি মদ পান করবেন না।

 

রুবাই যখন লেখা শেষ তখন রাত গভীর। এরপর ওমর খৈয়াম হাত বাড়িয়ে দিলেন তাঁর প্রিয় সিরাজির (তখনকার দিনে সব থেকে দামি মদ) বোতলের দিকে। কিন্তু হায় ! হায় ! বোতল তো খালি। মদ পানের নেশায় পাগলপারা হয়ে যায় যার ফলে তৎক্ষনাৎ রাস্তায় বেড়িয়ে পড়েন।

 

সামনের শুরিখানায় গিয়ে হাঁক ছাড়লেন- এক বোতল সিরাজি দাও!

দোকানদার ওমর খৈয়ামকে দেখে ঘোড়ার তেজে ছুটে এসে সসম্ভ্রমে দাঁড়ালেন। আজ জানি কপালে কী আছে? স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নিজাম-উল-মূলকের খাস দোস্ত খৈয়াম এসে হাজির! ভয়জড়িত কণ্ঠে সুরিওয়ালা বললেন, হুজুর সিরাজি তো নেই ! 

 

তাহলে অন্য কিছু দাও।

 

হুজুরের জন্য আমার বাপ-মা কোরবান! অন্য ব্র্যান্ড নেই। আজ অনেক খদ্দের ছিল।

 

আচ্ছা পুরো বোতল দরকার নেই। আমাকে এক গ্লাস দিলেও চলবে। যে কোনো পদ হোক..

 

হুজুরের সামনে আমার গর্দান হাজির। কোনো মদই নেই আজ ভাণ্ডারে.. ! 

 

'নেই' 'নেই' শুনে বিশ্বখ্যাত অমর সৃষ্টি রুবাইয়াত-এ ওমর খৈয়ামের লেখকের চাহিদার পারদ তখন আকাশে। মদিরা তেষ্টায় কাতর কবি বললেন, সবগুলো বোতলের তলানি ঝেড়ে মিলিয়ে-ঝুলিয়ে আমাকে একটা গ্লাস বানিয়ে দাও, ভাই.. কিছু একটা না হলে আজ আমার.. ! 

 

সুরিওয়ালা এবার কাঁপতে কাঁপতে মাটিতে পড়ে গেলেন।

 

কান্নাজড়ানো গলায় বললেন, হুজুর সব বোতল গ্লাস ধূয়ে ফেলা হয়েছে। কী যে করি.. কেন যে আমার আগে মনে হলো না যে আপনি আসতে পারেন.. পানশালার মালিক পাড়লে নিজের গালে চড় মারেন- অভিব্যক্তি এমন তার।

এবার বৈজ্ঞানিক-কবি হুঁঙ্কার ছাড়লেন, আরে বুরবাক বেয়াদপের দল ! ওই ধোয়া গ্লাসগুলো ধূয়ে আমাকে এক গ্লাস পানি দে... ! 

 

পানশালার মালিকের চোখ কপালে ! 

 

ওদিকে ওমর খৈয়াম বলছেন, ঘাবড়াও মাৎ- নেশার দায়িত্ব আমার ! 

 

সিটিবুলেটিন.কমে প্রকাশিত যে কোনও প্রতিবেদন, ছবি, লেখা, রেখাচিত্র, ভিডিও-অডিও ক্লিপ অনুমতি ছাড়া অন্য কোনও মাধ্যমে প্রকাশ, প্রচার করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।
আপনার মন্তব্য
এই বিভাগের সর্বোচ্চ পঠিত